ছােট বাচ্চাদের গল্প শুনালে তারা অনেক আনন্দ পায় তাদের মেধা বিকশিত হয়। তেমনই একটি গল্প নিচে দেওয়া হলো। গল্পটির নাম হলো - 'টুনটুনি ও বিড়ালের গল্প'। 'টুনটুনি ও বিড়ালের গল্প' -এর লেখক হলেন উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।
টুনটুনি ও বিড়ালের গল্প
- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
গৃহস্থের ঘরের পিছনে বেগুন গাছ আছে। সেই বেগুন গাছের পাতা ঠোঁট দিয়ে সেলাই করে টুনটুনি পাখিটি তার বাসা বেঁধেছে।
বাসার ভিতরে তিনটি ছোট্ট-ছোট্ট ছানা হয়েছে। খুব ছোট্ট ছানা, তারা উড়তে পারে না, চোখও মেলতে পারে না। খালি হাঁ করে আর চিঁ-চিঁ করে।
গৃহস্থের বিড়ালটি ভারি দুষ্টু। সে খালি ভাবে 'টুনটুনির ছানা খাব।' একদিন সে বেগুন গাছের তলায় এসে বললে, 'কী করছিস লা টুনটুনি?'
টুনটুনি তার মাথা হেঁট করে বেগুন গাছের ডালে ঠেকিয়ে বললে, 'প্রণাম হই, মহারানী!'
তাতে বিড়ালটি ভারি খুশি হয়ে চলে গেল।
এমনি সে রোজ আসে, রোজ টুনটুনি তাকে প্রণাম করে আর 'মহারানী' বলে, আর সে খুশি হয়ে চলে যায়।
এখন টুনটুনির ছানাগুলি বড় হয়েছে, তাদের সুন্দর পাখা হয়েছে। তারা আর চোখ বুজে থাকে না। তা দেখে টুনটুনি তাদের বললে, 'বাছা, তোরা উড়তে পারবি?' ছানারা বললে, 'হ্যাঁ মা, পারব।'
টুনটুনি বললে, 'তবে দেখ তো দেখি, ঐ তাল গাছটার ডালে গিয়ে বসতে পারিস কিনা।'
ছানারা তখনই উড়ে গিয়ে তাল গাছের ডালে বসল। তা দেখে টুনটুনি হেসে বললে, 'এখন দুষ্ট বিড়াল আসুক দেখি!'
খানিক বাদেই বিড়াল এসে বললে, 'কী করছিস লা টুনটুনি?'
তখন টুনটুনি পা উঠিয়ে তাকে লাথি দেখিয়ে বললে, 'দূর হ, লক্ষ্মীছাড়ী বিড়ালনী!'
বলেই সে ফুড়ক করে উড়ে পালাল।
দুষ্টু বিড়াল দাঁত খিঁচিয়ে লাফিয়ে গাছে উঠে টুনটুনিকেও ধরতে পারল না, ছানাও খেতে পেল না। খালি বেগুন কাঁটার খোঁচা খেয়ে নাকাল হয়ে ঘরে ফিরল।
0 Comments